সুগন্ধি পছন্দ করে না এমন মানুষ বোধ হয় দুনিয়ায় নেই। আর সেই সুগন্ধি যদি দূরে অবস্থানরত কোন প্রিয়জনকে পাঠানো যায়! তাও আবার মেসেজ করে! তাহলে তো কথাই নেই! এমনই একটি বিষয় নিয়ে আজকের এই লেখা। অধিকাংশ মানুষই এখন বার্তা বিনিময়ের জন্য স্মার্টফোনে নানা ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে। তাতে শুধু কথা বলা ও লেখাবার্তা পড়া যায়। এবার ডিজিটাল মাধ্যমে সুগন্ধিও বিনিময় করা যাবে! মালয়েশিয়ার গবেষকরা সম্প্রতি ডিজিটাল উপায়ে একে অন্যের কাছে ঘ্রাণ পাঠানোর দারুণ উপায় উদ্ভাবন করেছেন। তারা বলছেন, ডিজিটাল স্মেল প্রযুক্তির মাধ্যমে মেসেজিং ও ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেই সুগন্ধি পাঠানো যাবে। গবেষকদের দাবি, তারা এমন কিছু ইলেকট্রিক সুগন্ধি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা সত্যিই অভাবনীয়। যেগুলোর ঘ্রাণ অনেকটা ফল, কাঠ ও পুদিনার গন্ধের মতো। সুগন্ধিও পাঠানো যাবে মেসেজ করে! ডিজিটাল ঘ্রাণ মানুষের নাসিকা রন্ধ্রের পেছনে থাকা নিউরোনে দুর্বল ইলেকট্রনিক কারেন্ট তৈরি করবে। ফলে নাক সহজেই গন্ধ অনুভব করতে পারবে। তবে এর আগে নাকের ভেতরে ছোট্ট একটি তার প্রবেশ করাতে হবে। মালয়েশিয়ার ইমাজিনিরিং ইনস্টিটিউটের প্রধান গবেষক আদ্রিয়ান চিওক বলেন, এটি হবে একটি সমন্বিত ভার্চুয়াল বাস্তবতা। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ধরা যাক- কেউ ইন্টারনেটে বন্ধুদের সঙ্গে রাতের খাবার খেতে রেস্টুরেন্টে গেছেন। বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে দূরে বসেও ওই ব্যক্তি খাবারের ত্রিমাত্রিক ছবি যেমন দেখতে পাবেন, তেমনি নিতে পারবেন খাবারের গন্ধও। আদ্রিয়ান চিওক আরও বলেন, আমরা স্বেচ্ছায় গবেষণায় অংশ নেয়া ৩১ জনের ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়টি ইলেকট্রিক ঘ্রাণ তৈরি করতে পেরেছি। তিনি আশা করেন, আগামী এক দশকের মধ্যেই ইন্টারনেট চ্যাটিংয়ের সময় মানুষ সুগন্ধি একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারবে। তার মতে, বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকে ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন আশা করছি, ডিজিটাল সুগন্ধি তাদের সেই শক্তি ফিরিয়ে দিতেও সাহায্য করবে। তবে উদ্ভাবনটি নিয়ে ইতোমধ্যে বিতর্কও শুরু হয়েছে। অনেক বিজ্ঞানী বলছেন, ডিজিটাল বা ইলেকট্রিক গন্ধ বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই। যুক্তরাষ্ট্রের মোনেল কেমিক্যাল সেন্সেস সেন্টারের নিউরোসায়েন্টিস্ট জোয়েল মেইনল্যান্ড বলেন, বৈদ্যুতিক গবেষণার মাধ্যমে গন্ধ তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু সেটার ডিজিটাল কোনো রূপ নেই।